ভারতে ভোটের আগে নাগরিক আইন চক্রান্ত

ভারতে ভোটের আগে নাগরিক আইন চক্রান্ত


ছবি অনলাইন থেকে সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) দিয়ে দুই ধর্মের
মানুষকে ভারতছাড়া করার চক্রান্ত করছে। সেই লক্ষ্যেই তারা নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর করেছে।
গতকাল উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়ার বাণীপুরে বি আর আম্বেদকর স্পোর্টস ময়দানে এক সরকারি
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন মমতা। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার সিএএ কার্যকরের যে ঘোষণা
দেয়, তাতে আমার সন্দেহ হচ্ছে যে, পুরোটাই ভাঁওতা।

নির্বাচনের আগে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চলছে। আগামী দিন বিজেপি অশান্তির খেলা চেষ্টা করছে। ’ পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হচ্ছে বিজেপির লুডু খেলা। ওরা বলছে ছক্কা, আসলে এটা পুট।
যাদের এখন আবেদন করতে বলা হচ্ছে, যারা দরখাস্ত করবেন সঙ্গে সঙ্গে তারা নাগরিক থাকা সত্ত্বেও
বেআইনি, অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হবে। সবটাই বেআইনি ঘোষণা
হয়ে যাবে। আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

মমতার ঘোষণা : ‘আমরা এটা মানছি না, মানব না। একটা মানুষও যদি অধিকার পায়, আমরা খুশি হব
কিন্তু একটা মানুষও যদি বঞ্চিত হয়, তা মেনে নেব না। কোনো মানুষকে বঞ্চিত হতে দেব না। কাউকে
ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাতে দেব না। ’
মমতা বলেন, ‘ইচ্ছা করেই সিএএর ঘোষণা’র জন্য সোমবার দিনটা বেছে নেওয়া হয়েছে।
বিজেপির খেলা হচ্ছে ভাগাভাগি করে দেওয়া। তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন কেন করল না? ২০১৯ সালে
এই আইন পাস হয়েছিল। নির্বাচনের আগে যেটা করেছে তাতে কি মানুষ অধিকার পাবে! আপনি ভোটটাও
দিতে পারবেন কি না সন্দেহ রয়েছে। আসলে বিজেপি যা বলছে সবটাই মিথ্যা। ’ তিনি বলেন, ‘শুধু তিনটি
দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ছয়টি ধর্মের নাগরিকত্ব দেওয়ার মানুষদের কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু সেখানে আফগানিস্তান কী করে এলো? সেটা তো ভারতের সীমান্ত নয়। মিয়ানমার ভারতের সীমান্ত।
সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের কথা কেন বলা হলো না?’
একটি উদাহরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধরুন এপার বাংলার সঙ্গে ওপার বাংলার বিয়ে হয়েছে। এখানকার
ছেলে ওখানকার মেয়ে কিংবা তার উল্টোটা। তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? মেয়ে বাপের বাড়ি যেতে পারবে না,

ছেলে তার শ্বশুরবাড়ি আসতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে তারা উভয়েই রাষ্ট্রবিহীন হয়ে যাবে। ’ তার প্রশ্ন,
‘ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব কখনো শুনেছেন? আন্তর্জাতিক কনভেনশনে পরিষ্কার বলে দেওয়া আছে,
অনুপ্রবেশকারীরা যেন বৈধ কারণ ছাড়া রাষ্ট্রহীন না হয়ে পড়ে। এটা মানবিকতার অপমান। শরণার্থীরা যদি
বিপদে পড়ছে সেই রাষ্ট্রের পাশে অন্য যে রাষ্ট্র আছে মানবিকতার খাতিরে সেই রাষ্ট্রও আশ্রয় দিতে বাধ্য
থাকে। ’

তথ্যসূত্র: অনলাইন থেকে সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *