লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী

‘লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী’

শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমি ও ছায়ানটে ভেসে বেড়ায় গানের সুর। শিল্পকলায় ছিল লালন, ছায়ানটে
নজরুলের গান। চার দেয়ালের মিলনায়তন কিংবা উন্মুক্ত ময়দানে ছিল উল্লেখযোগ্য মানুষের উপস্থিতি। বাণী আর
বিচিত্র সুরের অবগাহনে সিক্ত হয় শ্রোতার অন্তর।
সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে তিন দিনের ‘লালন স্মরণোৎসব’।
এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল শুক্রবার। গতকাল দ্বিতীয় দিনে ছিল ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শীর্ষক
সাধু মেলা।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করে মেহজাবীন রহমান বলেন, ‘লালন সাঁইজি বৈষম্যবিরোধী এবং
মানবতার কথা বলে গেছেন।’
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত
জেলা প্রশাসক শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে সেখানে অতিথিরা বক্তব্য দেন। আর আলোচনা সভা শে‌ষে বাউল ও
লালন একাডেমির শিল্পীরা সেখানে লালনের গান পরিবেশন করেন।
গতকাল সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ার বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা
যায়, কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে শতাধিক অস্থায়ী দোকান বসেছে। গান শোনার ফাঁকে সেখানে মানুষ কেনাকাটা
করছেন। প্রবেশপথ, আখড়াবাড়ি (বারামখানা) ও মেলার মাঠ চত্বর কোথাও যেন তিল পরিমাণ জায়াগা ফাঁকা নেই।
লালন সাধু-ভক্তদের পদচারণায় মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
তার ভাষ্য, লালন শাহের প্রতি প্রেম-ভালবাসার টানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তবৃন্দ ছুটে এসেছেন। তাদের
পদচারণায় মুখরিত আখবাড়ি মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
গুরু শিষ্যের ভাব বিনিময় ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে শুরু হয় ফকির লালন শাহের ১৩৪ তম তিরোধান দিবসের সাধুসঙ্গ।
(শুক্রবার) সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পূর্ণ সভার মধ্যদিয়ে এ সাধুসঙ্গ শেষ হবে বলে জানান বয়োজ্যেষ্ঠ হৃদয় সাধু।
সাধু-ভক্তরা বলছেন, এ বছর উৎসব শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকে প্রচুর মানুষ আসছে। শুরুর দিনে পা ফেলার
জায়গা ফাঁকা নেই। মায়ার টানে, আত্মার টানে সাধু-ভক্তরা ছুটে আসছেন ধামে। আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ বাদ্যযন্ত্র ও
গানে গানে মুখর হয়ে উঠছে।

১২৯৭ বঙ্গা‌ব্দের পহেলা কার্তিক লালন সাঁই কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে মৃত্যুবরণ
করেন। এরপর থেকে আখড়াবাড়ি চত্বরে তার ভক্ত-অনুসারীরা তাকে স্মরণ করে আসছেন। লালন একাডেমি প্রতিবছর
ছেঁউড়িয়ায় একাডেমি চত্বরে লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করে।
শ্রোতার আসরে শিল্পীদের সঙ্গে বাঁশিতে ছিলেন মামুনুর রশীদ, তবলায় গৌতম সরকার, কিবোর্ডে রবিঙ্গ চৌধুরী;
মন্দিরা বাজিয়েছেন প্রদীপ কুমার রায়। ১৬টি সংগীত নিয়ে সাজানো হয়েছে এ শ্রোতার আসর।
তথ্যসূত্র: অনলাইন থেকে সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *