আল্লাহ মিথ্যাচারীকে পথপ্রদর্শন করেন না

আল্লাহ মিথ্যাচারীকে পথপ্রদর্শন করেন না


ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত

কোনো মানুষ যদি সত্য উদঘাটনে সন্দেহে পতিত হয়, অতঃপর প্রবৃত্তির অনুসরণ বাদ দিয়ে আল্লাহর কাছে নিজ সত্যতার
পরিচয় দিয়ে তা অনুসন্ধান করে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে এবং সত্য খুঁজে পায়। কিন্তু
তারপরও যদি বিফল হয় তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।
সত্যের বিপরীত হচ্ছে মিথ্যা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ করা হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারী মিথ্যাচারীকে পথ
প্রদর্শন করেন না (সুরা মুমিন-২৮)।
সর্বপ্রথম অন্তরে মিথ্যার উদয় হয়, অতঃপর তা ভাষায় প্রকাশ করে এবং শারীরিক কর্মে তার প্রতিফলন ঘটে। ফলে মিথ্যার
প্রভাবে তার জবান, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল এবং অবস্থা বিনষ্ট হয়। তখন মিথ্যাচার তার বেসাতিতে পরিণত হয়।
মুমিন হতে হলে আল্লাহ এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসায় আবদ্ধ হতে হবে।
আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় তার জাগতিক জীবনের সবকিছু নির্ধারিত হবে। আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসার কারণে সে
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসবে। রসুলের নির্দেশিত পথে যেহেতু আল্লাহকে চেনা যায়, আল্লাহর
দেওয়া দীনে আবদ্ধ থাকা যায় সেহেতু তার প্রতি তার নিখাদ আনুগত্য থাকতে হবে। ইমানদার হওয়ার জন্য আল্লাহ এবং
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসার প্রকাশ অপরিহার্য শর্ত।
এ ভালোবাসার জন্য দুনিয়ার অন্য সবকিছুর প্রতি তার পক্ষপাতিত্বের অবসান ঘটাতে হবে। আল্লাহ তার রসুল এবং
মুমিনদের ভালোবাসার মাধ্যমে ইমানের স্বাদ লাভ করা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিনটি
বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে আছে সে ইমানের স্বাদ লাভ করবে। (ক) আল্লাহ এবং তার রসুল তার নিকট সর্বাধিক প্রিয় পাত্র হবে। (খ)
কোনো মানুষকে ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালোবাসবে।
(গ) কুফরি থেকে আল্লাহ, তাকে মুক্তি দেওয়ার পর তাতে পুনরায় ফিরে যাওয়াকে ঘৃণা করবে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত
হওয়াকে সে ঘৃণা করে’ (বুখারি ও মুসলিম)। অন্তরে যদি ভালোবাসার বীজ বপন করা হয় এবং ইখলাস ও নবী (সা.)-এর
অনুসরণ দ্বারা তাকে সিক্ত করা হয়, তবে তাতে রংবেরঙের ফলের সমাহার দেখা যাবে, আল্লাহর হুকুমে তার স্বাদও অত্যন্ত
সুমিষ্ট হবে। ভালোবাসা চার প্রকারের : (১) আল্লাহকে ভালোবাসা। এটাই হচ্ছে ইমানের মূল। (২) আল্লাহর কারণে কাউকে
ভালোবাসা এবং তার কারণেই কাউকে ঘৃণা করা। এটা হচ্ছে ওয়াজিব ভালোবাসা। (৩) আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে ভালোবাসা।
অর্থাৎ ওয়াজিব ভালোবাসায় আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে অংশী করা। যেমন, মুশরিকদের তাদের মাবুদদের ভালোবাসা। এটা

হচ্ছে আসল শিরক। (৪) স্বভাবগত ভালোবাসা। যেমন পিতা-মাতা, সন্তান, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদিকে ভালোবাসা। এটা জায়েজ।
আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাইলে দুনিয়াবিমুখ হতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তুমি দুনিয়াবিমুখ
হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন’ (ইবনে মাজাহ)।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক
তথ্য সূত্র : অনলাইন থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *