ছবি: অনলাইন থেকে সংগৃহীত
ছবিটি করতে গিয়ে নিজের শুটিংয়ের ক্যামেরা, লেন্স, জমি ও কফিশপ পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে হয়েছে তাঁকে। শফিক আল মামুনকে
সেই গল্পই শোনালেন ছবির পরিচালক তানভীর হাসান।দেড় বছর ধরে শুটিং ও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষে গত ২৮ জুলাই
সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে ‘মধ্যবিত্ত’। এখন মুক্তির অপেক্ষা।
নিজের একটি ক্যামেরা ও সম্পাদনা প্যানেল ছিল, একটি কফিশপ ও সাভারের জিরানী বাজারে একখণ্ড জমি ছিল। প্রথমে ৫টি
ক্যামেরা ও ৩১টি লেন্স বিক্রি করে সেই টাকায় আবার কাজ শুরু করলাম। আগের শুটিং করা সাত দিনের ফুটেজ ফেলে দিয়ে শিল্পী
পরিবর্তন করে নতুন নায়ক শিশির ও এলিনা শাম্মীকে নিয়ে ওই বছরই ডিসেম্বর মাসে নতুন করে শুটিং শুরু করলাম।
সিনেমা বানানোর গল্পটিও যেন এই ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের টানাপোড়নের গল্প।পরে জিরানী বাজারের
জমিটাও বেচে দিলাম। একে একে সব বিক্রি করে দিতে হলো।
বিরতি দিয়ে দিয়ে কাজ করার কারণে বাজেট বেড়ে গেছে। একটি জিনিস বিক্রি করেছি, যা পেয়েছি তা দিয়ে কাজ করেছি। টাকা শেষ
হয়েছে, কিছুদিন বিরতি দিয়ে আরেকটি জিনিস বিক্রি করে কাজ করেছি। ছবির বাজেটটা আয়ত্তের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু
শেষ পর্যন্ত সেটি আর পারিনি।
শুটিং শেষ করতে পারলেও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ আটকে যায়। মিরপুরে আমার একটা ছোট্ট কফিশপ ছিল, সেটাও বিক্রি করে
দিই। এভাবে ছবিটির কাজ সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। এভাবে কাজ করার কারণে বাজেটটা ঠিক রাখতে পারিনি।
সবকিছু বিক্রি করে তো কাজটা শেষ করলাম। সেন্সর বোর্ডে জমা দিয়ে আবার বাধা। গল্পে কোনো সমস্যা না থাকলেও নাম নিয়ে
সমস্যা। সেন্সর বোর্ডের এক সদস্যের তীব্র বিরোধিতার মুখে অনেক দিন ছবিটি আটকে ছিল। সেন্সর বোর্ডে নতুন ভাইস
প্রেসিডেন্ট যোগ দেওয়ার পর ২৮ জুলাই ছবিটির ছাড়পত্র পেয়েছি।
সব মিলিয়ে আপাতত পরিস্থিতি ভালো নয় ।সরকার পতনের পর নতুন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা
দিয়েছে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, আগামী অক্টোবরে ছবিটা মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা আছে। মুক্তির পর ছবিটা কতটা চলবে,
বিনিয়োগ ফিরবে কি না, জানি না। হয়তো পরিবার চালাতে কষ্ট হবে। ক্যামেরা এডিটিং প্যানেল বিক্রির পর কফিশপ দিয়ে সংসার
চলত। সেটিও বিক্রি করতে হয়েছে বলে আয়রোজগার বন্ধ। তবু সবকিছুর বিনিময়ে হলেও স্বপ্ন তো পূরণ করতে পেরেছি, সেটাই
আমার জন্য অনেক।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত