চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা
হবে। বিদেশি অপারেটর নিয়োগের আগে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য টার্মিনালটি পরিচালনায় এই দরপত্র আহ্বান করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়
সভায় এ কথা বলেন। বন্দরের শহীদ মুন্সী ফজলুর রহমান মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই টার্মিনালে একসঙ্গে চারটি সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো যায়। এ জন্য
সংযোজন করা হয়েছে আধুনিক সরঞ্জাম। বর্তমানে টার্মিনালটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) পরিচালনা করছে বেসরকারি
প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। আগামী জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করা বন্দরের চুক্তি শেষ হচ্ছে। তাই নতুন করে
দরপত্রের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য টার্মিনালটি পরিচালনায় নতুন প্রতিষ্ঠান নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বন্দরের চেয়ারম্যান বলেন, নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক অপারেটর
ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ এ
বিষয়ে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে বছরখানেকের মতো সময় লাগবে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে পরিচালনার জন্য
প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে। দরপত্র যাতে প্রতিযোগিতামূলক হয়, সে জন্য
এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্ত সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধন শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
মতবিনিময় সভায় বন্দরের নতুন প্রকল্পগুলো নিয়েও কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বন্দরের পতেঙ্গায় লালদিয়ার
চরে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি হবে। বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ
শিপিং কোম্পানি ডেনমার্কের এপি-মুলার মার্সকের সঙ্গে আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ–সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত
করেন বন্দরের চেয়ারম্যান।
বন্দরের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বন্দরে সিন্ডিকেট ভেঙে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার
কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। যার বড় উদাহরণ বিগত সরকারের আমলে বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে
পণ্য স্থানান্তরের কাজের জন্য ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। যাচাই-বাছাই করে গত সপ্তাহে এসব লাইসেন্স
বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন শিপিং রুট বা পথ চালুর বিষয়েও কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, নতুন এই পথ চালু
হওয়ায় বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এতে সাশ্রয়ী, সময় ও খরচ বাঁচবে। উভয় দেশের
আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন করে গতিশীলতা পাবে। আমদানি পণ্যের পর্যাপ্ত কনটেইনার পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে নতুন এই
পথে নিয়মিত জাহাজ পরিচালনা করতে আগ্রহী জাহাজের মালিকেরা।
মতবিনিময় সভায় বন্দরের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ শহীদুল আলম, কমোডর এম ফজলার রহমান, কমোডর কাওছার
রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান