বাজারে শাকসবজির যে দাম, মাছ–মাংসের দিকে তাকানোর সাহস পাইনে

‘বাজারে শাকসবজির যে দাম, মাছ–মাংসের দিকে তাকানোর সাহস পাইনে’

গাইবান্ধা শহরের সুখনগর এলাকায় লন্ড্রির দোকান চালান বাবুল মিয়া (৫৫)। তিনজনের সংসার। ৭ শতক বসতভিটা
ছাড়া কোনো জমি নেই। লন্ড্রি থেকে মাসে আয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। বাবুল মিয়া বলেন, ‘এ আয়ের বেশির ভাগ টাকা
দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, চাল, সিলিন্ডার গ্যাস, ছেলের লেখাপড়ার খরচে ব্যয় হয়। প্রতি মাসেই ঋণ করে সংসার
চালাতে হচ্ছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম শুনে মাথা ঘুরে যায়।শাকসবজিরই যে দাম, মাছ–মাংসের দিকে তাকানোর
সাহস পাইনে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।’
গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারে বসে গতকাল সোমবার বিকেলে বাবুল মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। একই বাজারে
এসেছিলেন বানিয়ারজান এলাকার আবদুর রহমান (৫৫)। তিনি বলেন, চাকরিজীবীদের সারা বছর চাল কিনে খেতে হয়।
বাজারে এসে দেখেন চালের সঙ্গে সবজি, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। বাধ্য হয়ে তাই কয়েক কেজি চাল কম
কিনেছেন তিনি। বাজারটিতে প্রায় ৩০ জনের সঙ্গে কথা বলে একই বা কাছাকাছি ধরনের মন্তব্য পাওয়া গেছে।
গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে না ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। নাগালে নেই ব্রয়লার
মুরগি, ডিম ও বিআর-২৮ জাতের চালের দামও। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ, পটোল ও করলার দাম
কমেছে।
গতকাল গাইবান্ধা শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ টাকায়
বিক্রি হয়েছে, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। একইভাবে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা ছিল, বর্তমানে তা

১২৫ ছুঁয়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫০ টাকা, আর এখন তা ৫৫ টাকায় ঠেকেছে। প্রতি কেজি রসুন
২২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ, পটোল ও করলার দাম কমেছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি পটোল ছিল
৬৫ টাকা। বর্তমানে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ও করলার দাম তুলনামূলকভাবে কমেছে।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে পুরাতন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সবজি বিক্রেতা বলেন, বেশি দামে
সবজি কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করছেন। তবে বর্তমানে কিছু সবজির দাম কমেছে। আরও কমার আশা
করছেন তিনি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গাইবান্ধা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পরেশ
চন্দ্র বর্মন মুঠোফোনে জানান, নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি
অভিযানও চালানো হচ্ছে।
তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *